লুৎফুল হাসান রানা, কলাপাড়া ॥ কলাপাড়ায় পরিবারের অসচ্ছলতায় উচ্চশিক্ষার গন্ডি না পেরুলেও ইচ্ছাশক্তি আর পরিবারের সদস্যদের অনুপ্রেরণায় গবাদিপশু পালনে স্বাবলম্বী টিয়াখালী ইউনিয়নের মৃত শামসুদ্দিন হাওলাদারের দুই পুত্র শাহিন হাওলাদার এবং মামুন হাওলাদার। ছোটবেলায় সংসারের দায়িত্ব নিতে হয়েছে তাদের। বড় ভাই মামুন হাওলাদার স্কুলে পড়া অবস্থায় ১৯৯৬ইং সাল থেকে বাবার সাথে গরুর ব্যাবসায় নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। সেই থেকে স্বপ্ন দেখতেন একদিন বড় খামার গড়ে তুলবেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যৌথ পরিবারে বাস করে গড়ে তুলেছেন গবাদিপশুর একাধিক খামার। নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন উদ্দোক্তা হিসেবে। তাদের অনুপ্রেরণায় রজপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০-১২ টি খামার গড়ে উঠেছে। তাদের গরুর খামারে এখন ফ্রিজিয়ান, জার্সি, সংকর জাত এবং দেশি বিদেশি মিলিয়ে মোট ৮৯ টি গরু রয়েছে যার দুগ্ধ খামারে দৈনিক গড়ে ৩০০ লিটার দুধ এ এলাকার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা বরগুনাতেও বিক্রি করে।
এছাড়াও রয়েছে তাদের ছাগলের খামারে বর্তমানে হরিয়ানা, তোতা, রাম এবং ব্লাকবেঙ্গল মিলিয়ে ৫২টি বিভিন্ন জাতের ছাগল রয়েছে এবং দেশি মুরগী, কবুতর ও রাঁজাহাস সহ শাক-সবজি ও ফলের চাষ করে সফলতা পেয়েছেন এই কৃষক পরিবার। আরো রয়েছে দুইটি প্লটে ২৪০ শতক জমিতে নেপিয়ার জাতের ঘাস চাষ করেছেন এবং দানাদার খাদ্য হিসেবে ফিড, গম, ভুট্টা, সয়াবিন ও মুগ ডালের ভূষি এংকার, চালের কুড়া ও চাল ভাঙ্গা এবং বিভিন্ন ধরনের খৈল দিয়ে পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে থাকেন। খামারের স্বত্তাধিকারী মো: শাহিন হাওলাদার এ প্রতিনিধিকে জানায়, করোনাকালীন সময়ে খামার থেকে সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে। খামার থেকে একটি গরু ১.৫ লক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ৪ লক্ষ টাকা এবং প্রতিটি ছাগল ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
কলাপাড়া প্রানীসম্পদ দপ্তরের ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের এল এফ এ মো: আরিফুর রহমান গনমাধ্যমকে বলেন, উপজেলা প্রানীসম্পদ দপ্তর ডেইরি উন্নয়নে খামারীদের অধিক পরিমাণে দুধ, ডিম ও মাংস উৎপাদনের লক্ষ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে উঠান বৈঠক এবং প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করে, যা বর্তমানে চলমান রয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো. হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানায়, এ ধরনের খামারিদের প্রণোদনা সহায়তা হিসেবে কলাপড়া লাইভস্টক থেকে ভিটামিন, ক্রিমিনাশকসহ ভ্যাক্সিনেশন প্রোগ্রাম করা হয়। করোনাকালীন সময়ে প্রকৃত কৃষকদের নগদ অর্থ এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে বিনামূল্যে ভ্যাক্সিনেশন প্রোগ্রাম করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply